
একাধিক কারণে সম্প্রতি চিনা প্রোডাক্ট বর্জন করার আবেদন শুরু হয়েছে। যদিও এখনই সব চিনা প্রোডাক্ট বর্জন করা বাস্তব পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়। সব চিনা প্রোডাক্ট বর্জন করতে অনেকটা সময় লেগে যাবে। আর এই জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় চিনে তৈরি অথবা চিনা কোম্পানির প্রোডাক্ট বয়কট করার আবেদন জানানো শুরু হয়েছে। এই জন্য সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে টেক কোম্পানিগুলি। এই মুহূর্তে চিনা প্রোডাক্ট বয়কটের ডাক দিলেও এখনও তার বিকল্প সামনে আসেনি।
ভিভো, ওপ্পো, ওয়ানপ্লাস ও শাওমির মতো কোম্পানির ফোন কেনার প্রবণতা কমতে পারে। অনেকেই চিনা ব্র্যান্ডের পরিবর্তে স্যামসাং, এলজি ও অ্যাপেল ফোন কেনার দিনে ঝুঁকছেন।
ওপ্পো, ভিভো, শাওমির মতো চিনের কোম্পানিগুলি ভারতের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা পালন করে। এই সব ব্রান্ডের বেশিরভাগ ফোন ভারতেই তৈরি হয়। এর ফলে বহু ভারতবাসী এই সব কারখানায় কাজ করার সুযোগ পান।
অন্যদিকে স্যামসাং, অ্যাপেল, এলজি-র মতো কোম্পানিগুলির বেশিরভাগ ফোন চিনে তৈরি হয়। এছাড়াও সেই সব ফোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি করে চিনের বিভিন্ন কোম্পানি। তাই এখনই চিনা কোম্পানির ফোন বর্জন করে চিন থেকে দূরে থাকা যাবে না।
চিন থেকে ভারতে কারখানা সরিয়ে আনা সহজ নয়। একটা সামান্য ক্যাপাসিটর তৈরির খারখানা সরিয়ে আনতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
এই প্রসঙ্গে দুই বন্ধুর আলোচনা খুব উল্লেখযোগ্য। চিনা প্রোডাক্ট বর্জন সম্ভব কি না এই বিষয়ে বিতর্কের সময় দুই বন্ধু বলেন, সম্পূর্ণভাবে চিনা প্রোডাক্ট বর্জন করতে গ্রামে গিয়ে সাধারণ জীবনযাপন করতে হবে। সেখানে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট ছাড়াই বাঁচা গেলেও প্রয়োজন খাবার ও জল। কাঠের উনুনে রান্না করে নেওয়া গেলেও বেঁচে থাকার জন্য জল আবশ্যিক। আর গ্রামে যে পাম্প ব্যবহার করে মাটির নীচ থেকে জল তোলা হবে সেই পাম্পের একটা ক্যাপাসিটর হয়তো চিনে তৈরি। তাই এখনই সম্পূর্ণভাবে চিনের প্রোডাক্ট বর্জন সম্ভব না।
এই প্রতিবেদন পড়ে হয়তো মনে হতে পারে চিনের সমর্থনে লেখা। কিন্তু এটাই সত্যি ও আমাদের এটাই গ্রহণ করতে হবে। সরকারের সঠিক লক্ষ্য থাকলে হয়তো আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে চিনে তৈরি প্রোডাক্ট সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা সম্ভব।